উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ডায়েট এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ডায়েট এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ডায়েট এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন

বর্তমান সময়ে উচ্চ রক্তচাপিত রোগীর সংখ্যা অহরহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজন রোগী যে উচ্চ রক্তচনিত সমস্যার মধ্যে ভুগছে সেই রোগীকে বেশ কিছু নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে হয় যাতে করে তার এই সমস্যাটি বেশি না হয় এবং মরণগাতি না হয়ে ওঠে।

সে ক্ষেত্রে একজন উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীর যে সমস্ত ডায়েট মেইনটেইন করতে হয় এবং একই সাথে প্রতিদিনের লাইফ স্টাইলে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয় এবং যেভাবে প্রতিদিন চলতে হয় সেই সম্পর্কিত তথ্য এখান থেকে জেনে নিতে পারবেন।

মোটকথা হলো, এই সমস্যা নিয়েও যাতে সুস্থ জীবন যাপন করা যায় সেই সম্পর্কে তথ্য এখানে তুলে ধরা হবে। কারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করা খুবই প্রয়োজন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

যে কেউ যদি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে নিম্নলিখিত প্রত্যেকটি পদক্ষেপণ করতে পারেন এবং এভাবে যদি জীবন যাপন করতে পারেন তাহলে এই সমস্যাটি আপনার জন্য কোন ঝুঁকির কারণ হবে না।

ডায়েট পরিবর্তন

শারীরিক যে সমস্ত সমস্যা রয়েছে সে সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম প্রধান উপায় হল ডায়েট মেইনটেইন করা। আপনি যদি একটি সঠিক জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন এবং একই সাথে সঠিক ডায়েট মেইন করতে পারেন তাহলে কোন সমস্যাই আসলে সমস্যা নয়।

ঠিক একই রকম ভাবে উচ্চ রক্তচাপ জনিত যে সমস্ত রোগী রয়েছেন সে সমস্ত রোগের জন্য সঠিক ডায়েট মেনটেন করা খুবই প্রয়োজনীয়। যাতে করে তারা বেশি অসুস্থ হয়ে না পারেন।

ডায়েট মেন্টেন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়গুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন সেগুলো হল:

লবণের পরিমাণ কমানো

যে কোন খাবার যখন খাওয়াবে তখন লবনের পরিমাণ একেবারে কমিয়ে ফেলতে হবে। কারণ যে বা যারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগী রয়েছে তাদের জন্য প্রধান ক্ষতিকর বিষয় হচ্ছে খাবার লবণ।

এক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে খাবার লবণ খাওয়ার পরিবর্তে এই সমস্যাটি আরো বেগবান হতে পারে। সেজন্য অবশ্যই খাবারে অতিরিক্ত লবণ যোগ্যতা থেকে বিরত থাকতে হবে।

যে সমস্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার রয়েছে অর্থাৎ ফাস্টফুড, ক্যানড খাবার ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। কারণে সমস্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকতে পারে। তাই লবনের ঢুকিয়ে রানোর জন্য এই সমস্ত খাবার খাওয়া কমাতে হবে।

খাবার রান্না করার সময় লবণের পরিবর্তে বিভিন্ন মসলা ব্যবহার করতে পারেন। মোটকথা হল যে কোন ভাবে খাবারের লবণের পরিমাণ একেবারে কমিয়ে ফেলতে হবে।

ফল এবং শাকসবজি খাওয়া

আপনি যদি নিয়মিত পরিষদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি এবং ফল রাখতে পারেন তাহলে সেটি আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী হবে।

এগুলো পটাশিয়াম সমৃদ্ধ যার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এর যে সমস্ত গুনাগুন রয়েছে সেটি যে কাউকে সুস্থ রাখার জন্য যথেষ্ট। সেজন্য প্রতিদিন মাছ মাংস না খেয়ে নিত্যদিনের তালিকা সবুজ শাকসবজি রাখা বাধ্যতামূলক। এতে করে আপনি সুস্থ থাকবেন এবং একটি সঠিক সুস্থ জীবন গড়ে তুলতে পারবেন।

চর্বিযুক্ত খাবার কমিয়ে ফেলতে হবে

স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন- লাল মাংস, মাখন, এবং ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলো উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি বাড়িয়ে ফেলতে পারে।

এক্ষেত্রে আপনি বিকল্প স্বাস্থ্যকর চর্বি খেতে পারেন। বিকল্প স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন- জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো, এবং বাদাম খান। এগুলো আপনার উচ্চ রক্তচাপের উপর সেরকম একটা ঝুঁকির কারণ হবে না।

ড্যাশ ডায়েট অনুসরণ করুন

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানোর জন্য অন্যতম আরেকটি মাধ্যম হলো ড্যাশ ডায়েট এর অনুসরণ করা। ড্যাশ (ডায়েটারি অ্যাপ্রোচ টু স্টপ হাইপারটেনশন) ডায়েট হলো উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য একটি বিশেষভাবে তৈরি খাদ্য পরিকল্পনা।

ডায়েট পরিবর্তন

এটি ফল, শাকসবজি, শস্য, এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার অন্তর্ভুক্ত করে। এবং এই সমস্ত খাবারগুলো নিয়মিত পরিসরে গ্রহণ করার ফলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে৷

জীবনযাত্রার পরিবর্তন

আপনি যদি আপনার জীবনযাত্রার পরিবর্তন করতে পারেন তাহলে যে কোন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। অথবা যে সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় সে সমস্ত রোগ থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।

সেজন্য জীবনযাত্রার পরিবর্তন হিসেবে যে সমস্ত বিষয়গুলো আপনার নিত্যদিনের তালিকা যুক্ত করতে পারেন সেগুলো হল:

নিয়মিত ব্যায়াম

নিয়মিত পরিসরে আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত পরিসরে ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে আপনার শরীর এবং মন দুটো সুস্থ থাকবে।

নিয়মিত ব্যায়াম

খুব স্বাভাবিকভাবে যে সমস্ত ব্যায়াম করা যেতে পারে সেগুলো হলো:

  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধরণের ব্যায়াম করুন, যেমন-
  • হাঁটা, জগিং, বা সাঁতার কাটা।
  • নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন থাকে তাহলে সেটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকে অনেক অংশে বাড়িয়ে ফেলে। সেজন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।

সে ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ওজন কমানোর জন্য, স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব।

এছাড়া আরো যে সমস্ত অভ্যাস আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমিয়ে ফেলবে সেগুলো হলো:

  • ধূমপান ত্যাগ করা।
  • অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলা।
  • মানসিক চাপ কমানো।
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করা।
  • নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা।

সমস্ত বিষয়গুলো সমন্বয়ে আপনি যদি চলতে পারেন তাহলে আপনার জীবনে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেক অংশ কমে যাবে। এছাড়া আপনি যদি ইতিমধ্যেও উচ্চ রক্তচাপের হয়ে থাকেন তাহলে এ সমস্ত বিষয়গুলো আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।

আপনি যদি সঠিকভাবে চলতে পারেন এবং একই সাথে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন তাহলে যে কোন রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এর বিকল্প উচ্চ রক্তচাপ নয়।

জেনে নিন : মোটরসাইকেল কেনার আগে যেসকল বিষয় আপনাকে জানতে হবে

এছাড়াও নিয়মিত পরিসরে আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এবং যখনই স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যতিক্রম অবস্থায় পরিণত হবেন তখন অবশ্যই ডাক্তারের কাছে চলে যাবেন। সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে এবং একই সাথে সঠিক ডায়েট মেইনটেইন করলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব৷

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *